গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি :
কাপাসিয়ায় সার ডিলাররা ইউরিয়া, টি.এস.পি, ডি.এ.পি এবং এম ও পি সারের বাড়তি টাকা নিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় কৃষকরা। তারা জানান, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ণ কর্পোরেশন (বিএডিসি) এবং বি সি আই সি অনুমোদিত ডিলার ও খুচরা বিক্রেতারা প্রতি কেজি সার ০৫ থেকে কোন ক্ষেত্রে ১৫ টাকা করে বেশি নিচ্ছেন। বোরো আবাদের মৌসুম চলছে। ফলে বাধ্য হয়ে তাদের বেশি দামে সার কিনতে হচ্ছে।
সরকার প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) ইউরিয়া ১১০০ টাকা, প্রতি বস্তা টি.এস.পি ১১০০ টাকা, প্রতি বস্তা ডি.এ.পি ৮০০ টাকা এবং প্রতি বস্তা এম ও পি ৭৫০ টাকা নির্ধারণ করেছে। এ হিসেবে প্রতি কেজি ইউরিয়া ২২টাকা, টি.এস.পি ২২ টাকা, ডি.এ.পি ১৬ টাকা এবং প্রতি কেজি এম ও পি ১৫ টাকায় বিক্রির কথা। কিন্তু প্রতি কেজি ইউরিয়া ২৯টাকা প্রতি কেজি টি.এস.পি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, প্রতি কেজি ডি.এ.পি ২০ থেকে ২৮ টাকা এবং প্রতি কেজি এম ও পি ২০ থেকে ২৯ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।
কৃষকদের অভিযোগ, অনুমোদিত ডিলার এবং খুচরা বিক্রেতারা তাদের কাছ থেকে সারের দাম বেশি নিচ্ছেন। কৃষকরা সারের বেশি দাম রাখার বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে বিক্রেতারা বলেন, সরকার সারের দাম বাড়িয়েছে, আর আমাদের বেশি দামে সার কিনতে হচ্ছে। ফলে কৃষকরা বেশি দামেই সার কিনতে বাধ্য হচ্ছে। এতে করে ফসল উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
উপজেলার জায়গীর গ্রামের কৃষক মো: রেজাউল করিম (৫২) বলেন, ডিলার ও খুচরা সার বিক্রেতারা তাদের দোকানে লোক দেখানোর জন্য মূল্য তালিকা টাঙিয়ে রেখেছেন। কিন্তু সেই দামে সার বিক্রি করছেন না। তারা প্রতি কেজি ইউরিয়া ২৯ টাকা,প্রতি কেজি টি.এস.পি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, প্রতি কেজি ডি.এ.পি ২০ থেকে ২২ টাকা এবং এম ও পি ২০ থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি করছেন। প্রতিবাদ করেও কোন লাভ হচ্ছে না।
একই গ্রামের কৃষক মো: রফিক (৫৫) বলেন, আমরা কৃষক মানুষ। চাষ-আবাদ কইরা সংসার চলে। কিন্তু সেলো মেশিন ভাড়া (সেচপাম্প ভাড়া), কামলার দাম দিয়া ধান চাষ করলে পোষায় না। তার উপর বেশি দাম দিয়ে সার কিনতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে চাঁদপুর বাজারের বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ণ করপোরেশনের (বিএডিসি) অনুমোদিত ডিলার- মিলন বলেন, আমরা কোন ধরনের সারের দাম বেশি নিচ্ছি না। সরকার নির্ধারিত মূল্যেই আমরা সার বিক্রি করি। এলাকার কৃষকরা প্রতিহিংসা বশত আমাদেরকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য এমন অভিযোগ করছে।
তিনি আরো বলেন- প্রতিজন কৃষক সার ক্রয় করার পর আমরা খাতায় তাদের স্বাক্ষর রেখে দিই। কি পরিমাণ সার নিয়েছে, সেই মূল্য নির্ধারণ করে টাকা নেই। কোন ভাবেই বেশি রাখার সুযোগ নেই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাপাসিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমন কুমার বসাক জানান- বেশি দামে সার বিক্রি অভিযোগটি আমরা পেয়েছি বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখবো, দোষী সাব্যস্ত হলে শাস্তিযোগ্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে জানার জন্য কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ. কে. এম গোলাম মোর্শেদ খানের সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন একটা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি আমি কৃষি কর্মকর্তা এবং স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান কে দায়িত্ব দিয়েছি তারা তদন্ত করছে যদি তার বিরুদ্ধে সঠিক প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।