মোঃ কামাল উদ্দিন, চকরিয়া প্রতিনিধি: কক্সবাজারের চকরিয়ায় চাঁদাবাজি বন্ধে পুলিশের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হলেও এখনো বেপরোয়া শহীদ আব্দুল হামিদ পৌর বাস টার্মিনাল কেন্দ্রীক পরিবহন চাঁদাবাজরা। প্রশাসনিক নিষেধাজ্ঞা যেন এসব পরিবহন চাঁদাবাজদের কাছে রুপ কথার গল্প ছাড়া কিছুই নয়। গত ১৩ ডিসেম্বর (শুক্রবার) সকাল ৭টার দিকে সরেজমিন দেখা যায়, শত শত পরীক্ষার্থী গাড়ির জন্য দাঁড়িয়ে আছে শহীদ আব্দুল হামিদ পৌর বাস টার্মিনালে। কিন্তু, বাস সংকটের কারণে যথা-সময়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে কক্সবাজারমুখী একটি নোয়া গাড়িকে দাঁড় করায় পরীক্ষার্থীরা। অনেক অনুরোধের পর পরীক্ষার্থীদের নিতে রাজি হন নোয়া গাড়ির চালক মোঃ আব্দুল করিম। কিন্তু, পরীক্ষার্থীরা গাড়িতে উঠার পর চালক গাড়ি চালাতে চাইলে সামনে দাঁড়িয়ে থাকে অজ্ঞাত এক পরিবহন চাঁদাবাজ। হঠাৎ করে চালককে বলতে শুরু করেন- এখান থেকে যাত্রী নিয়েছো তাই টাকা দাও। তখন নোয়া গাড়ির চালক বললেন, আমি এখান থেকে তাদের নিতে ইচ্ছুক ছিলাম না। যেহেতু তারা পরীক্ষার্থী তাই তাদের অনুরোধে নেওয়া হয়েছে। এরপরও নাছোড়বান্দা চাঁদাবাজ টাকা না নিয়ে নোয়া গাড়িকে যেতে দিবে না। এক পর্যায়ে তাদের মাঝে বাড়াবাড়ি হওয়ার উপক্রম হলে- ওই চাঁদাবাজ ফের বলে পৌরসভার টাকা দাও। এভাবে চলতে থাকে বেশকিছুক্ষণ। এদিকে, পরীক্ষার্থীরা তাদের পরীক্ষার সময়ের কথা চিন্তা করে ওই পরিবহন চাঁদাবাজকে বুঝাতে চেষ্টা করে। কিন্তু, তখন উল্টো পরীক্ষার্থীদের সাথেও খারাপ আচরণ করে সে পরিবহন চাঁদাবাজ। এমনকি, তার সাথে কথা কাটাকাটি হচ্ছে দেখে দৌঁড়ে আসে ওই চাঁদাবাজের আরেক সহযোগী। এসময় পরিস্থিতি বেগতিক দেখে পরীক্ষার্থীদের সাথে একই গাড়িতে থাকা স্থানীয় এক সংবাদকর্মী তাদের চাঁদাবাজির ঘটনাটি ভিডিও ধারণ করার চেষ্টা করেন। তার ধারণকৃত ১৭ সেকেন্ডের এক ভিডিওতে চাঁদাবাজের সহযোগীকে বলতে শোনা যায়, ভিডিও করে কী করবেন আপনি? তখন প্রথমে আসা মূল চাঁদাবাজ উত্তেজিত হয়ে তার সহযোগীকে ওই স্থানীয় সংবাদকর্মীর মুঠোফোন কেড়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন। এ ঘটনায় জড়িত দুই চাঁদাবাজের তাৎক্ষণিক নাম জানা সম্ভব হয়নি। এদিকে, এ ঘটনার পর আরাকান সড়ক পরিবহন শ্রমিক নেতা কামাল আজাদের সাথে উক্ত বিষয়ে জানিয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, চকরিয়া শহীদ আব্দুল হামিদ পৌর বাস টার্মিনালকে ঘিরে পরিবহন চাঁদাবাজদের উৎপাত দিনের পর দিন বেড়েই চলছে। কোন কিছুতেই তাদের প্রতিহত করা সম্ভব হচ্ছে না। এসময় তিনি আরো বলেন, আপনাদের কাছে যে ভিডিও আছে তা দিয়ে প্রশাসনকে অবগত করুন। প্রশাসন এ বিষয়ে উদ্যোগ নিলে এসব চাঁদাবাজদের প্রতিহত করতে আমরা প্রশাসনকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবো। এবিষয়ে জানাতে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুরুল কাদের ভূইয়া'র মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায়, চকরিয়া-পেকুয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার রকিব উর রাজা'র মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, হাইওয়ে সড়কে চাঁদাবাজি করার কোন সুযোগ নেই। এব্যাপারে খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।