মুহাম্মদ মুছা মিয়া, মাধবদী (নরসিংদী) প্রতিনিধিঃ নরসিংদীর মাধবদীতে সিটি (পাঃ) হাসপাতালে সিজারিয়ানের পর রোগীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। জানা যায় গতকাল রাত ১১টায় বথুয়াদী গ্রামের ইয়ামিনের স্ত্রী ছনিয়া আক্তার(১৮) বাচ্চা প্রসবের ব্যাথ্যা হলে মাধবদী সিটি হাসপাতালে ভর্তি হয়। পরে অপারেশনের মাধ্যমে ছেলে বাচ্চা জন্মদানের পর রোগীর মৃত্যু হয়। পরিবার ও এলাকাবাসী হাসপাতালের দায়িত্বে অবহেলায় মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ করেন । আজ ২০ মে বেলা ১১টা পর্যন্ত বিষয়টি সমাধানের জন্য হাসপাতালেই লাশ পরেছিল। পরে ভোক্তভোগীর পরিবারকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিশাল অংকের অর্থের বিনিময়ে চুপ থাকতে বলে। কোথাও কোন অভিযোগ করবেনা মর্মে অঙ্গিকার করে লাশ দাফনের জন্য পরিবারের নিকট মৃত ছনিয়ার লাশ হস্তান্তর করা হয় বলে একটি সুত্রে জানা যায়।
এবিষয়ে মৃত ছনিয়ার স্বামী বলেন মোঃ ইয়ামিন বলেন সিজার করার পর রোগী অসুস্থ হয়ে যায়। সারা রাতই রোগী কষ্ট পায়। আমরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ডাক্তার আনার কথা বললেও ডাক্তার আসেনি। অন্য ঔষধ খাওয়াতে বললেও বলে এই ঔষধেই চলবে। অন্য হাসপাতালে নেওয়ার কথা বললেও তারা রোগী নিয়ে যেতে দেয়নি ।
মৃত ছনিয়ার মা বলেন আমাদের রোগী হাসপাতাল থেকে বের করে দেন আমরা অন্য হাসপাতালে নিয়ে যাই। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলে এই ডাক্তার ও এই ঔষধই ভালো অন্যকোন হাসপাতালে নিতে হবে না। আমার মেয়েকে তারা অন্য হাসপাতালে নিতে দিলনা। আমার মেয়ে এখানেই মারা যায়।
রোগীর মৃত্যুর বিষয়ে মাধবদী সিটি হাসপাতালের ম্যানেজার জাকির হোসেনের সাথে কথা বললে তিনি জানান রাত ১১টায় রোগী ভর্তি হয়। রাত ১২টার সময় ডাঃ শের ই মোস্তফা সিজার করলে একজন ছেলে বাচ্চার জন্ম হয়। পরে রোগীর শ^াসকষ্ট দেখা দিলে হাসপাতালের নিয়মিত ডিউটি ডাক্তার সুমন কুমার নাথ চিকিৎসা করেন। এসময় অন্যকোন ডাক্তার ছিলনা। কিন্তু রোগী ভোর ৫টায় মৃত্যুবরণ করেন।
হাসপাতালের নিয়মিত ডিউটি ডাক্তার সুমন কুমার নাথ বলেন- রোগীর অবস্থা তিনদিন যাবতই খারাপ ছিল। রাতে যখন নিয়ে আসে তখন আমরা বলেছিলাম যে রোগীর অবস্থা ভালো নয়। রোগী ও বাচ্চা দুইজনই মারা যেতে পারে। আমরা সিজার করাতে পারব না। কিন্তু রোগীর গার্জিয়ানের কথায় আমরা সিজার করিয়েছি।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে মাধবদী সিটি হাসপাতালের এমডি মোঃ তানিনের সাথে কথা বলতে হাসপাতালে গিয়ে পাওয়া যায়নি। পরে মুঠোফোনে কল দিলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
উল্লেখ্য যে মাধবদীর হাসপাতাল গুলোতে কয়েকদিন পরপর রোগী মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। গত বছরের মার্চ মাসে মাধবদী প্রাইম জেনারেল হাসপাতালের ডাক্তারের অবহেলায় বীনা চিকিৎসায় ফাবিহা মাদেহা নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়। এইযে গেল রমজান মাসে মাধবদী হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতালে সিজার করার আগ মুহূর্তে রোগীকে এনেস্থিসিয়া দেওয়ার কিছুক্ষণ পর মৃত্যুবরণ করে। পেটে থাকা বাচ্চাটিকেও পরে বের করা হয়নি। ফলে এক সাথে দুইটি জীবন চলে গেলো। তাই এলাকাবাসী হাসপাতালগুলোতে সিভিল সার্জনের নজর দেওয়া উচিত বলে মনে করেন। প্রশাসনের তদারকির মাধ্যমে যেসকল হাসপাতাল পরিচালনার যোগ্য নয় তাদের অনতিবিলম্বে বন্ধ করে দেওয়ার দাবি করেন। পাশাপাশি অত্র অঞ্চলের জন্য একটি সরকারি হাসপাতাল নির্মানের দাবী জানান।