আল-আমিন হোসেন সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে মঙ্গলবার ( ২৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ইফতারির শরবতে অনুমোদনহীন স্যালাইন খেয়ে বিষক্রিয়ায় ১ শিশুর মৃত্যু হয়েছে, একই পরিবারের অসুস্থ আরো ৪ সদস্যকে
হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কজনক বলে জানিয়েছে চিকিৎসক।
অসুস্থরা হলেন মা পারভিন বেগম( ৩৮),ও ৩ শিশুকন্যা রিয়া(৮) নূরী (৫) এবং মিথিলা(৭)।
নিহত মেয়ে জিম (৩) হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই মারা গেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। তাদের সবার বাড়ি বেলকুচি উপজেলা রাজাপুর ইউনিয়নের বৈলগাছি গ্রামে।
এ ঘটনায় পুলিশ পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম(নিরস্ত্র) বাদী হয়ে পেনাল কোড আইনের ৩০৪ এর ক এবং ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতায়নে মামলা করে। পরে ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট ৪ জনকে গ্রেফতার করে বেলকুচি থানা পুলিশ।
নিহত জিমের নানা রবিউল ইসলাম বলেন ,শবে বরাতের রোজা শেষে, সোমবার সন্ধ্যায় ইফতার করার সময় মহল্লার স্বাগরের দোকান থেকে ওরস্যালাইন এবং নুর ইসলাম এর দোকান থেকে ট্যাংক ও টেস্টি স্যালাইন কিনে সরবত তৈরি করে মা পারভীন। ওই সরবত খেয়ে সবাই অসুস্থ হয়ে পড়ে।অসুস্থ সবাই পাতলা পায়খানা ও বমি করতে থাকে, অবস্থার অবনতি হলে তাদের সিরাজগঞ্জে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসক এ সময় শিশু জিম কে মৃত ঘোষণা করে। বাকিদের জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে ভর্তি করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রেফার করে দেয়, বর্তমানে তারা বগুড়ার শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।
বঙ্গমাতা শেখ বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার শামিমুল ইসলসাম জানান, সন্ধ্যার পর পাঁচজন রোগী হাসপাতালে আসে। তাদের বক্তব্য অনুযায়ী খাবার স্যালাইন খেয়েই তারা অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদের মধ্যে একটি শিশু হাসপাতালে আনার আগেই মারা গেছে। বাকি চারজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে মা পারভিন ও মেয়ে রিয়ার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এ ব্যাপারে বেলকুচি থানার উপ- পুলিশ পরিদর্শক রিয়াজু রহমান বলেন,এ ঘটনায় মামলা করা হয়েছে,মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
মামলার সাথে সংশ্লিষ্ট ২ মুদি দোকানদার আমিরুল ইসলাম ওরফে নুরু ও স্বাগর, সমেসপুর বাজারের অনুমোদনহীন স্যালাইন এর পাইকারি বিক্রেতা হাফিজুল ইসলাম প্রাঃ, এবং অনুমোদিনহীন নাফিস টেস্টি এলাইন ( স্যালাইন) এর প্রস্তুতকারী আনিসুর রহমান( আবু সামা) সহ মোট ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া অবশিষ্ট শরবত, এসএমসির ওর স্যালাইনের ছিড়া খালি প্যাকেট, নাফিস টেস্টি স্যালাইনের ছেঁড়া খালি প্যাকেট , প্রমি অরেঞ্জ জুস পাউডার এর ছেঁড়া খালি প্যাকেট, দোকান ও কারখানা হতে অবিকৃত অনুমোদনহীন স্যালাইন জব্দ করা হয়েছে।
এ নিউজ লেখা পর্যন্ত সর্বশেষ জানা যায় মৃতদেহ ময়নাতদন্ত শেষে দাফন করা হয়েছে।