ক্রাইম রিপোর্টার
গাজীপুরের কালীগঞ্জের হরিদেবপুরে সর্বত্রই এখন মাদকের বানিজ্য চলছে। কালীগঞ্জ থানা পুলিশসহ প্রশাসনের বিভিন্ন সংস্থা উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মাদক বিরোধী অভিযান চালালেও পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে হরিদেবপুরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় চলছে রমরমা মাদক ব্যবসা।
উপজেলার মোক্তারপুর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের হরিদেবপুর (গুচ্ছ) গ্রামের মুচি বাড়িতে সহ প্রত্যন্ত এলাকায় অবাধে চলছে মাদকের রমরমা ব্যবসা। এ যেন মাদক ব্যবসার এক আখড়ায় পরিণত করেছে কতিপয় চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী।
এর সঙ্গে নতুন করে যোগ হয়েছে মোক্তারপুরের বড়গাঁও, বাগুন, হরিদেবপুরের কয়েকটি পরিবারের বখাটে সন্তানরা। যারা প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে চোলাইমদ, গাজা ও ইয়াবার ব্যবসা।প্রতিনিয়ত স্থানীয় ও বহিরাগত ক্রেতারা ক্রয় করতে আসে বাংলামদ, গাজা এবং ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদক দ্রব্য।
স্থানীয় সুত্র জানায়, কালীগঞ্জ উপজেলার মোক্তারপুর ইনিয়নের হরিদেবপুর গ্রামের জৈনিক মৃত হিরালাল রবিদাসের দুই পুত্র নরেশ রবিদাস, সোবাস রবিদাস এবং এক মৃত পুত্র বিকাশ রবিদাসের স্ত্রি ওনরেশ রবিদাসের স্ত্রী দীপিকা রানী আশপাশের সবকটি রবিদাস পরিবার বাংলামদ তৈরি করে। প্রতিরাতে ওই খানে বসে মদের আড্ডা।
মাদক সম্রাট নরেশ তত্ত্বাবধানে চলছিল বাংলা মদ প্রস্তুত প্রক্রিয়া এরকম একটি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে
২৯শে জুলাই শনিবার দুপুর ১২টার দিকে একটি অনুসন্ধানী নিউজ সংগ্রহ করেতে সেখানে যায় চারজন সাংবাদিক । এবং সেখান গিয়ে দেখতে পায় যে মৃত বিকাশ রবিদাসের স্ত্রি জৈনিক মহিলা এবং নরেশ রবিদাসের স্ত্রী দীপিকা রানী বাংলা মদ প্রস্তুত করতেছে। তাৎখনিক ১২:১৭ মিনিটে কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ফায়েজুর রহমানকে বিষয়টি Whatsapp এর মাধ্যমে কল করে যানানো হয়। এরই মধ্যে হাজির হয় স্থানীয় ইউপি সদস্য আনোয়ারুল হক নাদের, যুবলীগ সহ-সভাপতি পরিচয় দানকারী জাহীদ এবং জামালপুর থেকে শাহাবুদ্দিন মোড়লের পুত্র জৈনকি আবু সাদ্দাম শ্যামল সহ স্থানীয় ৮-১০ জন। মেম্বার সাহেব পরিচয় জানতে চাইতে বলা হয় আমার সবাই সাংবাদিক। আনোয়ারুল হক নাদের সকলের সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর তাদের ম্যানেজের সর্বোচ্চ চেষ্টা (আর্থিক প্রলোভন)করে। এর মধ্যে যখন সময় ৩.২৫ কালীগঞ্জ থানায় উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইমরান তালুকদার সংগিয় ফোর্স নিয়ে আসেন মোক্তারপুরের হরিদেবপুর মুচি বাড়িতে। সেখানে এসে জাল দেওয়া অবস্থায় ৮-১০লিটার বাংলা মদ উদ্ধার ও মদ তৈরিতে ব্যবহৃত সকল কিছু নষ্ট করে দেয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পলায়ন করে মৃত বিকাশ রবিদাসের স্ত্রি জৈনিক মহিলা এবং নরেশ রবিদাসের স্ত্রী দীপিকা রানী। কালীগঞ্জ থানায় উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইমরান তালুকদারকে মোঠোফোনে জানতে চাইতে কোন মামলা হয়েছে কিনা উত্তরে তিনি বলেন না কোন মামলা হয়নি। তাহলে ৮-১০ মদ উদ্দার করলে তা কোথায় উত্তরে বলেন ফেলে দিছি। এর পূর্বেও বিভিন্ন সময় বাড়িতে বিভিন্ন অভিযান পরিচালিত হয় কিন্তু মাদক সম্রাট নরেশ পুলিশের হাত থেকে ফাঁকি দিয়ে সবসময় বেরিয়ে যায়।
কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ফায়েজুর রহমান বলেন, দুপুর ১২:১৭ মিনিটে সাংবাদিক জাকারিয়া আল মামুন মদ তৈরি হচ্ছে বলে আমাকে ফোন দেয়। পরে আমি সেখানে উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইমরান তালুকদারকে ফোর্স সহ পাঠাই। কিন্তু উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইমরান তালুকদার ওই বাড়ি থেকে কোন মদ পায়নি বলে আমাকে যানায়।
হরিদেবপুর এলাকার সিনিয়র সাংবাদিক জহিরুল ইসলাম বলেন তারা প্রায় ১০ বছর যাবত স্থানীয় কিছু দুষ্কৃতিকারী দলীয় ক্ষমতাধারীদের মাসোয়ারা দিয়ে মাদক সম্রাট নরেশ সহ একাধিক পরিবার এখানে চুলায় মদ প্রস্তুত, বিক্রয় সহ ইয়াবা এবং গাজা বিক্রি করে আসছে। বিভিন্ন সময় আমি বন্ধ করার অনেক চেষ্টা করেছি এবং প্রশাসন এবং স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের সহায়তায় বন্ধও করেছি একাধিকবার। কিছুদিন যেতে না যেতেই যেই লাউ সেই কদু। মাদক সম্রাট নরেশ অত্যন্ত চালাক তাই তাকে কখনো ধরতে পারেনি প্রশাসন।
মোক্তারপুর ইউপি চেয়ারম্যান এস.এম. আলমগীর হোসেন বলেন, মোক্তারপুরের হরিদেবপুরে প্রায় সময়ই মদতৈরি করত। আমি নিজেও কয়েকবার পরিষদের সদস্যদের নিয়ে অভিযান চালিয়ে তা বন্ধ করেছি। এ বিষয়ে প্রশাসনের সর্বোচ্চ মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।