মোঃ কামাল উদ্দিন, কক্সবাজার প্রতিনিধি:
কক্সবাজারের চকরিয়ায় অভিযান চালিয়ে ৫টি আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলিসহ দুই অস্ত্র ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব-১৫)।
গত বুধবার (২১ জুন) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে চকরিয়া-বদরখালী (কেবি জালাল উদ্দিন) আঞ্চলিক সড়কের সাহারবিল ইউনিয়নে এ অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। র্যাব-১৫ কক্সবাজারের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্ণেল সাইফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আটককৃতরা হলেন, মাতামুহুরি সাংগঠনিক উপজেলা সাহারবিল ইউনিয়ন ৯নং ওয়ার্ড কোরালখালী এলাকার মৃত আলহাজ্ব আব্দুল হাকিমের ছেলে মোঃ মোকাদ্দেস (৪০), পশ্চিম বড় ভেওলা ১নং ওয়ার্ড ঈদমনি এলাকার কবির আহমদের ছেলে মোঃ শেফায়েত মিয়া (১৯)। র্যাব-১৫ এর প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, চকরিয়া- বদরখালী আঞ্চলিক সড়ক সাহারবিল এলাকায় আগ্নেয়াস্ত্র বেচা-কেনার জন্য মোটরসাইকেল যোগে চকরিয়া পৌরশহরে দিকে যাচ্ছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার রাতে ওই সড়কের উপর অস্থায়ী চেকপোষ্ট স্থাপন করে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় একটি মোটরসাইকেল সন্দেহজনকভাবে কৌশলে দ্রুত চেকপোষ্ট অতিক্রম করার চেষ্টাকালে র্যাবের আভিযানিক দল সুজুকি মোটর সাইকেলসহ (রেজিঃ নংঃ চট্ট মেট্রো-ল-১৮-১১৫৪) দুইজনকে আটক করেন। তাদের দেহ তল্লাসী করে ১টি ওয়ান শুটারগান, ১টি ওয়ান শুটার থ্রী কোয়ার্টার গান, ৩টি দেশীয় তৈরী এলজি এবং ২ রাউন্ড ১২ বোর শর্টগানের কার্তুজ উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অস্ত্র ব্যবসায়ীরা জানায়, তারা দীর্ঘদিন যাবৎ গোপনে অস্ত্র ক্রয় বিক্রয় করে আসছে। জব্দকৃত অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে নিজ হেফাজতে রেখেছিলো। বৃহস্পতিবার বিকেলে আটককৃতদের চকরিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে থানায় লিখিত এজাহার দাখিল করা হয়েছে। এদিকে, সাহারবিল ইউনিয়নের মোঃ আলমগীর নামের এক যুবদল নেতা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লিখেন, গত ২১জুন রাত ৮ টায় চৌয়ারফাঁড়ী বাজার থেকে হঠাৎ র্যাব-১৫ তাকে গ্রেফতার করে। গাড়ীর ভেতরে সিনিয়র অফিসারের সাথে প্রথমে দুই মিনিট কথা বলার অনুমতি চাইলে অনুমতি না দিয়ে তাকে বলা হয় র্যাব১৫ এর কাছে ইনফরমেশন আছে আলমগীরের কাছে অবৈধ অস্ত্র আছে। আগে র্যাব অস্ত্র উদ্ধার করার পর আলমগীরকে কথা বলার অনুমতি দিবে বলে জানান। তখন আলমগীর র্যাবকে উদ্দেশ্য করে বলেন, হয়তো ঐ মূহুর্তে তাকে মেরে মেরে ফেলা হোক নয়তো দুই মিনিট কথা বলার সুযোগ দেওয়া হোক। পরে র্যাব-১৫ কথা বলার অনুমতি দিলে, তখন সে র্যাবকে বলে তার উপর ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তাকে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করতেছে এবং সে তখন আরো বলে সঠিক অভিযান করলে সব বেরিয়ে আসবে। অস্ত্র কে আনতেছে বা কারা এর সাথে জড়িত তাদেরকেই ধরুন সব বেরিয়ে আসবে। পরে র্যাব-১৫ তার কথা আমলে নিয়ে তাদের অপারেশন শুরু করে। একটু পর অস্ত্র সহকারে একটি বাইক ও দুইজন লোক আটক করে। আটকের পর সে দেখতে পায়, আটক ২ব্যক্তি তার প্রিয় মানুষ বিএনপি নেতা মোকাদ্দেস ও সাহারবিল ইউনিয়ন যুবদলের বর্তমান সদস্য সচিব মুবিনের দোকানের মেনেজার শেফায়েত। এসময় তাদের আটকের পর র্যাব-১৫ আলমগীরের পরিবারকে ডেকে তাকে স্ব-সম্মানে ছেড়ে দেয়। তার এ ফেসবুক স্ট্যাটাসে প্রকৃতপক্ষে উঠে আসে, যুবদল নেতাকে অস্ত্র মামলায় ফাঁসাতে গিয়ে ফেঁসে গেলেন বিএনপি নেতা মোকাদ্দেস ও তার সহযোগী শেফায়েত। চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চন্দ্রন কুমার চক্রবর্তী বলেন, এ ব্যপারে গ্রেফতার অস্ত্র ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে থানায় অস্ত্র আইনে একটি মামলা মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানান।