সংকটে বিধ্বস্ত পাকিস্তানে মূল্যস্ফীতির নতুন রেকর্ড হয়েছে। দেশটিতে মূল্যস্ফীতির হার ৪৭ শতাংশে পৌঁছেছে; যা আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। গত ২২ মার্চ শেষ হওয়া সপ্তাহে পাকিস্তানের সংবেদনশীল মূল্য সূচকে (এসপিআই) মূল্যস্ফীতির এই রেকর্ড করা হয়েছে। যা পাকিস্তানের গত ৪৮ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত বৃদ্ধির কারণে মূল্যস্ফীতি লাগামহীন হয়েছে বলে দেশটির বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। এসপিআয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশটিতে গত এক সপ্তাহে ৫১ ধরনের পণ্যসামগ্রীর মধ্যে ২৬টির দাম বেড়েছে। আর ১৩টি পণ্যসামগ্রীর দাম কমেছে। আর দাম অপরিবর্তিত রয়েছে ১৩টি পণ্যের।
দেশটির বাজারে পেঁয়াজের দাম ২২৮ দশমিক ২৮ শতাংশ, সিগারেটের ১৬৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ, গমের আটা ১২০ দশমিক ৬৬ শতাংশ, গ্যাসের দাম ১০৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ, ডিজেল ১০২ দশমিক ৮৪ শতাংশ, চা ৯৪ দশমিক ৬০ শতাংশ, কলা ৮৯ দশমিক ৮৪ শতাংশ, বাসমতি চাল ৮১ দশমিক ২২ শতাংশ, পেট্রোল ৮১ দশমিক ১৭ শতাংশ, ডিম ৭৯ দশমিক ৫৬ শতাংশ বেড়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১৭ শেষ হওয়া সপ্তাহে পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে ১০ দশমিক ১৪ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
চলমান অর্থনৈতিক সংকট এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ বিলম্বের কারণে পাকিস্তানে ভয়াবহ অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা তৈরি হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তলানিতে পৌঁছানোর কারণে এই সংকট আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে পাকিস্তানে ভোক্তা মূল্যস্ফীতি ২৭ দশমিক ৩ শতাংশে পৌঁছায়। যা গত ৪৮ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এবার অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দেশটিতে মূল্যস্ফীতি আকাশচুম্বী হয়েছে।
অর্থনৈতিক সংকট উৎড়াতে দেশটির সরকার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের কাছে ১০০ কোটি ডলারের ঋণ চেয়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে এই ঋণের বিষয়ে আইএমএফের সাথে আলোচনা শুরু হলেও এখনও তা আলোর মুখ দেখেনি।
ঋণ পেতে আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী পাকিস্তানের সরকার জ্বালানির দাম ও কর বৃদ্ধি করেছে। এছাড়াও দেশের অর্থনৈতিক কাঠামোতে আইএমএফের পরামর্শে সংস্কারও এনেছে পাকিস্তান।