পর্তুগালে যথাযথ মর্যাদায় মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে মঙ্গলবার সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে পর্তুগিজ স্থানীয় প্রশাসন, বাংলাদেশ দূতাবাস এবং পর্তুগালে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের অংশগ্রহণে দেশটির রাজধানী লিসবনে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ১ মিনিট নীরবতা পালন শেষে প্রথমেই পর্তুগালে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারিক আহসান সূচনা বক্তব্য দেন। এতে একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বাংলাদেশিদের আত্মত্যাগ ও গৌরবের ইতিহাস তুলে ধরেন।
স্থানীয় সান্তা মারিয়া মাইয়র মিউনিসিপ্যালিটির প্রেসিডেন্ট মিগেল কোয়েলহো এই দিনে মাতৃভূমি এবং ভাষার জন্য যারা জীবন দিয়েছেন তাদের প্রতি সৌহার্দ প্রকাশ করেন। তাছাড়া একই সঙ্গে পর্তুগালে বাংলাদেশিদের অবদান এবং বাংলাদেশিরা বর্তমান পর্তুগিজ সমাজের অনবদ্য অংশ হিসেবে অভিমত ব্যক্ত করেন।
আরোইশ মিউনিসিপ্যালিটির প্রেসিডেন্টের প্রতিনিধি লুইস ফ্রাঞ্চিসকো বলেন, মাতৃভাষা জীবন ধারণের জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর মধ্যে একটি। সেই মাতৃভাষা হরণ করা একটি গর্হিত কাজ। সুতরাং এই দিনে যারা মায়ের ভাষা রক্ষায় প্রতিবাদে জীবন দিয়েছেন একজন পর্তুগিজ হিসেবেও আমাদের দায়িত্ব এই দিনটিকে স্মরণ করা। তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো। একই সঙ্গে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস এবং বাংলাদেশের গৌরবান্বিত সময়গুলোকেও স্মরণ করেন।
এছাড়া পর্তুগালের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি টিয়াগো মন্তেইরো বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে পর্তুগালের সম্পর্ক ঐতিহাসিক। আমরা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপন করতে যাচ্ছি। তবে ইতিহাস ও ঐতিহ্যের আদান প্রদানে এই সম্পর্ক পাঁচশত বছরের পূর্ব থেকেই। পর্তুগিজ সমাজে বাংলাদেশিরা খুব সুন্দরভাবেই মিশে আছে তাদের অর্থনৈতিক এবং সামাজিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে।
দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে মঙ্গলবার প্রবাসী বাংলাদেশি বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ফুল হাতে আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি গান গাইতে গাইতে শহীদ মিনারের উদ্দেশে যাত্রা করেন। পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশ দূতাবাস, পর্তুগালের স্থানীয় আরোইশ ও সান্তা মারিয়া মাইয়র মিউনিসিপ্যালিটি, পর্তুগালের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ পর্তুগাল শাখা, বাংলাদেশ যুবলীগ পর্তুগাল শাখা, বিএনপি পর্তুগাল শাখা, পর্তুগাল বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ অ্যাসোসিয়েশন, বরিশাল অ্যাসোসিয়েশন, ফরিদপুর অ্যাসোসিয়েশন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া অ্যাসোসিয়েশন ইন পর্তুগাল, পর্তুগাল বাংলা প্রেস ক্লাব ও পর্তুগালের নেতৃবৃন্দ শহীদ মিনারের পাদদেশে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।