সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫, চাকরির আবেদন ফি সর্বোচ্চ ২০০ টাকা ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে বঙ্গবন্ধু ল’ কমপ্লেক্স স্থাপন বাস্তবায়নের দাবিতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে এক এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি উদ্বোধন করা হয়। কর্মসূচির উদ্বোধন করেন চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ প্রত্যাশী শিক্ষার্থী সমন্বয় পরিষদের সভাপতি শরিফুল হাসান শুভ।
সংবাদ সম্মেলনে পরিষদের সদস্য সচিব মোহাম্মদ রাসেলের সঞ্চালনায় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পরিষদের সভাপতি শরিফুল হাসান শুভ।
তিনি বলেন, দেশের উচ্চশিক্ষিতরা বিগত প্রায় ১০ বছর যাবৎ সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩০ বছর থেকে বাড়িয়ে ৩৫ বছরে উন্নীতকরণের দাবি জানিয়ে আসছেন। নির্বাচনী ইশতেহার ২০১৮ এর পাতা ৩২ এবং শিক্ষা দক্ষতা ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি অনুচ্ছেদে বলা আছে, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়ে মেধা ও দক্ষতা বিবেচনায় রেখে যুক্তিসংগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ২০১১ সালে সরকারি চাকরি থেকে অবসরের বয়স দুই বছর বাড়িয়ে ৫৭ থেকে ৫৯ বছর করা হয়েছে। তবে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানো হয়নি। এছাড়া চাকরি শেষে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ স্বাভাবিক চাকরি প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে অন্তরায়।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস কমিশনে (বিসিএস) আবেদনের বয়সসীমা ৩০ বছর হলেও জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনে (বিজেএস) আবেদনের বয়সসীমা ৩২ বছর। এছাড়া সরকারি নার্সিংসে ৩৫ বছর ও বেসরকারি স্কুল/কলেজে ৩৫ বছর। দুঃখজনক হলেও সত্যি বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান/সংস্থাগুলো তাদের চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা সরকারি মানদণ্ড অনুযায়ী ৩০ বছরকেই অনুসরণ করে। বাংলাদেশের জাতীয় যুব নীতিতে ১৮-৩৫ বছর বয়সীদের যুবক বলা হয়। তবে ৩০ বছর হলেই তাদেরকে চাকরিতে আবেদনের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না।
শরিফুল হাসান শুভ বলেন, বিশ্বের ১৬২টি দেশে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর, কোনো কোনো দেশে তা উন্মুক্ত। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে বিভিন্ন রাজ্য ভেদে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫-৪৫ বছর। মালদ্বীপে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৪৫ বছর, শ্রীলঙ্কায় ৩৫ বছর, নেপালে ৩৫ বছর ও আফগানিস্তানে ৩৫ বছর। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে শুধুমাত্র বাংলাদেশে ও পাকিস্তানেই চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩০ বছর।
পরিষদের সভাপতি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি সময় প্রায় সব ধরনের চাকরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি/পরীক্ষা বন্ধ ছিল। পৃথিবীর অনেক দেশে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর বা তার বেশি। এ সত্ত্বেও করোনা মহামারির কারণে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা আরও ২-৩ বছর পর্যন্ত বাড়িয়েছে। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে ৭১ বার বয়সসীমা বৃদ্ধির দাবি উত্থাপিত হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটি লিখিতভাবে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার জন্য সুপারিশ করলেও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সানোয়ারুল হক সনি, এ আর খোকন, মোস্তফা আমির ফয়সাল, জহিরুল ইসলাম জনি, মজিবুর রহমান মুন্না, আরেফিন হাই সৌরভ, ফারিহা মান্নান রিমা, মুক্তা সুলতানা ও তানভীরুজ্জামানসহ আরও অনেকে।