প্রতারণার শিকার ওই বাজারের দোকানদার ওমর ফারুক বলেন, তাকে ব্যাংক লোন পায়িয়ে দেয়ার কথা বলে প্রতারক সাইদুর তার থেকে চার লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। ব্যাংক লোন না পেয়ে সাইদুরের কাছে চার লাখ টাকা ফেরত চাইলে, সাইদুর তার সন্ত্রাসীবাহিনী ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ওমর ফারুককে মারার হুমকি প্রদান করে।
ওমর ফারুক আরও অভিযোগ করে বলেন, গাজীপুর কাঁচামাল আড়তদার মালিক গ্রুপের সভাপতি মো. আব্দুস সোবাহানকে নারী দ্বারা ফাঁদে ফেলার জন্য সাইদুর তার কাছে কয়েকজন নারীর সন্ধান করেন। নারী দিয়ে সোবাহানকে ব্ল্যাকমেইলে সহযোগিতায় আর্থিক প্রলোভনও দেখান সাইদুর। এহেন অপরাধমূলক কর্মকান্ডে রাজি না হওয়ায় ফারুককে নানা ধরনের হুমকিও প্রদান করেন সাইদুর। এমনকি সোবাহানকে নারী কেলেঙ্কারিকে ফাঁসাতে ওমর ফারুকের সহধর্মিণী রিতাকেও একই প্রস্তাব দেন সাইদুর। রিতাকে একলক্ষ টাকার প্রলোভনও দেখানো হয়। একটি ভিডিও বার্তায় এমটিই জানিয়েছেন রিতা। যাকে নারী কেলেঙ্কারিতে ফাঁসাতে এতো ষড়যন্ত্র, তিনি গাজীপুর কাঁচামাল আড়ৎদার মালিক গ্রুপের সভাপতি মো. আব্দুস সোবাহান।
এ বিষয়ে আব্দুস সোবাহান জানান, দালিলিকভাবে গাজীপুর চৌরাস্তার কাঁচামাল বাজার সমিতির সভাপতি হিসেবে তিনি বাজারটির নিয়ন্ত্রণ করে আসছেন। প্রতারক সাইদুর তাকে এ বাজার থেকে জোড়পূর্বক ও বেআইনিভাবে উচ্ছেদ করার জন্য দীর্ঘদিন যাবত হয়রানি করে আসছেন। এ বিষয়ে সোবাহান আইনের দারস্থ হয়েছেন বলেও জানান।
এদিকে ব্যাংক লোন পাইয়ে দেয়ার কথা বলে টাকা হাতিয়ে নেয়ার বিষয়ে সাইদুরের বিরুদ্ধে উঠে আসে আরও বিস্তর অভিযোগ। গাজীপুর মহানগরের ১৫নং ওয়ার্ডের কাশেম টেক্সটাইলের সাবেক নেতা মোমিনুল ইসলামের (মোমিন) থেকে ব্যাংক লোনের কথা বলে তিন লাখ টাকা নেন সাইদুর। গাজীপুর চৌরাস্তার মাছ ব্যবসায়ী হাশেমের থেকে নেন ত্রিশ হাজার টাকা। এছাড়াও একাধিক ব্যক্তির থেকে ব্যাংক লোনের কথা বলে হাতিয়েছেন কয়েক লক্ষ টাকা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন স্থানীয় ব্যক্তি জানান, সাইদুর জামালপুর থেকে এসে গাজীপুর চৌরাস্তা এলাকায় বসবাস করছেন কয়েক বছর যাবত। এর মধ্যেই সে প্রতারণার ঘাটি গেঁড়ে বসেছে। পুলিশের ভয়, ব্যাংক লোন, নারী দিয়ে ফাঁসিয়ে ব্ল্যাকমেইল ও প্রতারণাই হচ্ছে তার মূল পেশা।
চৌরাস্তায় বসবাসরত আফসানা নামের এক গৃহকর্মী জানান, তাদের স্বামী-স্ত্রী’র মধ্যে ঝামেলা বাধিয়ে আর্থিক ফায়দা লুটে সাইদুর। পরবর্তীতে সেই ঝামেলা আরো বড় আকার ধারণ করে। এর পেছনে রয়েছে সাইদুরের হাত। পরে ওই নারী ময়মনসিংহ আদালতে সাইদুরের নামে মামলাও দায়ের করেন।
জানাযায়, সাইদুরের নামে চাঁদাবাজি, ছিনতাই, প্রতারণাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে গাজীপুর মেট্রোপলিটনের বাসন থানায় একটি মামলার গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি হয়েছে। গাজীপুর মেট্রোপলিটনের বাসন থানার ওয়ারেন্ট অফিসার মতিউজ্জামান জানান, মোঃ সাইদুর রহমানের (পিতা মোঃ নুর হোসেন) নামে একটি একটি ওয়ারেন্ট এসেছে। তাকে গ্রেফতারে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে।
####