রেজাউল করিম, মাধবদী (নরসিংদী) প্রতিনিধিঃ
মাত্র ১০ বছরেই থেমে গেলো দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী শিশু মাইশার জীবন। মাইশা নরসিংদীর মাধবদী কুঁড়েরপাড় গ্রামের জামিয়া ক্বওমিয়া মহিলা মাদরাসার দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। মাধবদী ভগীরথপুর গ্রামের মোঃ নেছারউদ্দিনের মেয়ে মাইশা। মাদরাসা কর্তৃপক্ষের দাবি গতকাল ১ ডিসেম্বর বিকালে মাদরাসার বাথরুম থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে শিশু মাইশাকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে যায় শিক্ষকরা। অন্যদিকে শিশু মাইশার পরিবারের দাবি মাইশাকে হত্যা করে তারপর ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। তারা মাইশার শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে জানান।
জামিয়া ক্বওমিয়া মহিলা মাদরাসার মুহতামীম মুফতি আসানউল্লাহ বলেন আসরের নামাজে সময় ছাত্রীরা এস্তেঞ্জা করতে গিয়ে মাইশা ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে দৌড়াদৌড়ি শুরু করে। আমাকে মাদরাসার হুজুর ও খাদেম ঘটনা বললে আমরা গিয়ে দেখি এই অবস্থা। পরে আমরা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই। পাসপাতালে নিলে হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত বলে ঘোষনা দেয়।
মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা সামছুল আলম বকুল কাছে ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি সেখেরচর হাটে ছিলাম। শিক্ষকরা আমাকে ফোন দিয়ে জানায় একজন ছাত্র কে মাদরাসার বাথরুমে ঝুলন্ত অবস্থায় পায়। পরে তারা হাসপাতালে নিয়ে যায় ও মেয়েটির মৃত্যু হয়। তবে ঘটনাটি কিভাবে ঘটনা আমরা বলতে পারছিনা।
ঘটনা সম্পর্কে শিশু মাইশার চাচা মাওলানা মোছলেহ উদ্দিন জানান মাইশার বাবা নেছারউদ্দিন সকালে মেয়েকে মাদরাসায় গিয়ে নাস্তা করিয়ে রেখে আসে। পরে দুপুরে পারিবারিক একটি দাওয়াতে মাইশার পরিবারসহ আমরা আত্মীয়র বাড়িতে যাই। সেখানে বিকাল ৪টার দিকে মাদরাসার হুজুরদের ফোন থেকে কল করে জানানো হয় আপনার মেয়ে অসুস্থ। তাকে আমরা নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে আসছি আপনারা আসেন। পরে আমার পরিবারের লোকজন হাসপাতালে গিয়ে দেখতে পায় মাইশা মৃত। কর্তব্যরত ডাক্তাররা জানায় মাইশাকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। মাইশার চাচা আরো বলেন নিহতের শরীরে বিভিন্ন অঙ্গে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ১০ বছরের শিশু বাচ্চা কিভাবে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করতে পারে? নিশ্চয় তাকে হত্যা করা হয়েছে।
মাইশার ফুফা আইনুল হক জানান আমরা খবর পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে মাইশার শরীরের বিভিন্ন অংশে জখম দেখতে পাই। দেখেই বুঝা যায় এটা একটি হত্যা। আমরা এই হত্যাকান্ডের বিচার চাই।
নিহত মাইশার মা বলেন আমার মেয়েকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। তার সারা শরীরে মাইরের চিহ্ন রয়েছে। আমি খুনের বিচার চাই। মাদরাসার হুজুরই এই ঘটনার সাথে জড়িত। আমি এই হত্যাকান্ডের বিচার চাই।
নিহতের বাবা নেছার উদ্দিনও তার মেয়ের হত্যাকান্ডের বিচার দাবি করেছেন।
রাতে নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(সদর সার্কেল) কে এম শহিদুল ইসলাম সোহাগ ও মাধবদী থানার অফিসার ইনচার্জ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ঘটনা সম্পর্কে মাধবদী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ রকিবুজ্জামান মুঠোফোনে জানান আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিদর্শণ করেছি। এখন তদন্ত রিপোর্ট আসার পর প্রকৃত ঘটনা বলা যাবে।