ফরিদ উজ জামান
কালীগঞ্জের নরুন এলাকায় কলেজ ছাত্র রিদুয়ান হাসান আলিফকে (১৭) ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনায় অজ্ঞাত ৩০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। ঘটনায় সংশ্লিষ্টতা রয়েছে এমন তিন কিশোরকে পুলিশী হেফাজতে নেয়া হয়েছে বলে যানা যায়।
মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) দুপুরে নিহতের বাবা বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মলার তদন্ত কর্মকর্তা কালীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মশিউর রহমান ।
নিহত রিদুয়ান হাসান আলিফ শ্রীপুরের প্রহলাদপুর ইউনিয়নের ডুমনী এলাকার আমান উল্লাহর ছেলে। আলিফ প্রহলাদপুর স্কুল এন্ড কলেজের একাদশ শ্রেণীর দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলো।
পুলিশী হেফাজতে নেয়া তিনজনের মধ্যে রয়েছে, নরুন এলাকার শাহ আলমের ছেলে জিহাদ (১৭), ফাইজুল্লাহর ছেলে ফয়সাল (১৭) এবং মুজিবুর রহমানের শাকিব (১৭)।
বাদীর ভাষ্য অনুযায়ী, রিদুয়ান হাসান আলিফ প্রহলাদপুর স্কুল এন্ড কলেজের ২য় বর্ষের ছাত্র। সোমবার (১৪ নভেম্বর) সন্ধ্যা অনুমানিক ৭টার দিকে তার বন্ধু শ্রাবন (১৯), নাজমুল হক নাদিম (১৯), কাউসার (১৮), অর্নব (১৯) ও সিফাত (১৯) নরুন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ইসলামী ওয়াজ মাহফিলে যায়। পরে তারা মাহফিলে মহিলাদের জন্য নির্ধারিত প্যান্ডেলে পেছনে অবস্থান নেয়। সে সময় অজ্ঞাত ৫/৬ জন এসে তাদের জিজ্ঞাসা করে কেন তারা মহিলা প্যান্ডেলের পেছনে দাঁড়িয়ে আছে? এই কথা বলে আলিফসহ সবাইকে গালাগালি করে এবং মারধর করে তারা। স্থানীয়রা তাদের বাঁধা দেয় এবং উভয় পক্ষকে ওই স্থান থেকে সরিয়ে দেন। পরবর্তীতে আলিফসহ তার বন্ধুরা নরুন বাজারে থাকি অলি উল্লাহর পেট্রোল পাম্পের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। পরে আনুমানিক রাত সাড়ে ৭টার দিকে অজ্ঞাত ২৫/৩০ জন এসে আলিফসহ তার বন্ধুদের পূণরায় মারধর শুরু করে। একপর্যায়ে অজ্ঞাতদের মধ্যে একজন আলিফের বুকের বাম পাশে ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করে। সে রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে যায়। আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে অজ্ঞাত আসামীরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আলিফকে মৃত ঘোষণা করেন।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ওয়াজ মাহফিলে নরুন এলাকার এক তরুণীর সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল আলিফসহ তার বন্ধুরা। এমন সন্দেহ থেকেই অভিযুক্তরা তাকে ধরে নিয়ে মারধর করে ছুরিকাঘাত করলে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নিহত আলিফের বন্ধুরা হত্যায় জড়িত রয়েছে এমন তিনজনকে শনাক্ত করার পর পুলিশ তাদের আটক করে থানায় নিয়ে গেছে। তারা সকলে নরুন এলাকার বাসিন্দা।
মামলার বাদী আমান উল্লাহ বলেন, আলিফকে যে কোন আক্রোশ থেকে অজ্ঞাত আসামীরা পরিকল্পিত ভাবে মারধর ও ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে। এ বিষয়ে আমি বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কালীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মশিউর রহমান খান বলেন, নিহতের পিতা আমান উল্লাহ বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন {মামলা নাম্বার ১৫(১১)২২}। ঘটনার কারণ উদঘাটনে তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হবে। কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পরবর্তীতে বিস্তারিত জানানো হবে।